জেলা প্রতিনিধিঃ নিখোঁজের ৩ দিন পর ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সুমনা হক নামে ৯ বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় রিয়াজ আহম্মেদ কানন নামের ১৩ বছরের কিশোরকে আটক করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ মাটি চাপা দেয় ঘাতক। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে বারোটার দিকে পৌর এলাকার পূর্ব গোয়ালপাড়ার ইয়াসিন হাবিব কাননের বাসার একটি রুম থেকে মাটি খুঁড়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত সুমনা হক শহরের গোয়ালপাড়া এলাকার জুয়েলের মেয়ে ও সে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর ছাত্রী ছিলো। অপরদিকে আটককৃত রিয়াজ আহম্মেদ একই এলাকার ইয়াসিন হাবীব কাননের ছেলে ও সে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র।
পুলিশ জানায়, ১৬ই ডিসেম্বর নিজ এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় সুমনা নামের ওই শিশুটি। পরে তার বাবা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে। এরপর মেয়ের পরিবারের সাথে কথা বলা হলে তারা জানান, পাশের বাসায় খেলতে যায় শিশুটি।
তারপর থেকেই তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারপর থেকেই এই এলাকার
ইয়াসিন হাবীব কাননের বাসায় নজরদারি শুরু করা হয়। অবশেষে ইয়াসিন আলীর ছেলে
রিয়াজকে সন্দেহ হলে বৃহস্পতিবার রাতে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
পরে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে সে। এরপর তথ্য মতে
তার পাকা বাসার নির্মাণাধীন একটি বাথরুমের ভিতরে মাটি খুঁড়ে শিশুটির মরদেহ
উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি অপারেশন গোলাম মূর্তজা
জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিকে ধর্ষণের পর মেরে ফেলে মাটি
চাপা দেয়া হয়েছিল। উদ্ধারের সময় শিশুটির গায়ে কোনো কাপড় ছিল না। ঘটনার
সত্যতা নিশ্চিত করে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি আশিকুর রহমান জানান, এই ঘটনায়
মামলার প্রস্তুতি চলছে। ময়না তদন্ত করার পরে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
অপরদিকে হত্যাকারী ছেলেটির দ্রুত কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন নিহত শিশু
সুমনার পরিবার সহ এলাকাবাসী। এদিকে সুমনার ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে
উঠেছে তার নিজ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও প্রাক্তন ছাত্রীরা। শুক্রবার দুপুরে বড়
মাঠ থেকে বের হয়ে চৌরাস্তা পর্যন্ত শ’ শ’ ছাত্রীর অংশগ্রহণে একটি মৌন মিছিল
হয়। এরপর তারা ঠাকুরগাঁও চৌরাস্থায় একটি বিরাট মানববন্ধন করে।